গরম যখন বাড়ছে তখন বেশ কিছু ত্বকের সমস্যা থেকে দূরে থাকার সহজ উপায় না জেনে নিলে কিন্তু মুশকিল। এই সময় ঘামের প্রকোপে আমাদের শরীরে বেশ কিছু ফাঙ্গাস এসে বাসা বাঁধে। যাদের করণে দাদ- চুলকানির মতো কষ্টকর ত্বকের রোগ হওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।
চিকিৎসা পরিভাষায় ডার্মাটোফাইটোসিস নামে পরিচিত এই রোগ মূলত কিছু ফাঙ্গাসের কারণে হয়ে থাকে। এমন রোগ সাধারণত শরীরের যে কোনও অংশে হতে পারে। তবে নখ, ত্বক এবং স্কাল্পে বেশি হতে দেখা যায়। তবে মনে রাখা উচিত এই রোগ টা সাধারণত ছোঁয়াচে রোগ। তাই বাড়ির কারও হলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা শুরু করা উচিত। না হলে অল্প দিনেই বাকি সবারও এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বহুগুণে বৃদ্ধি পায়।
রিং ওয়ার্ম বা দাদকে তার প্রকৃতি অনুযায়ী সাধারণত সাত টি ভাগে ভাগ করা হয়। শরীরের নানা অংশে গোলাকার, লালচে ধরনের যে দাদ হয়, তাকে টিনিয়া কর্পোরিস নামে ডাকা হয়ে থাকে। আধুনিক মেডিসিনের সাহায্যে রিং ওয়ার্মের চিকিৎসা করা যেতে পারে। কিন্তু এক্ষেত্রে বেশ কিছু ঘরোয়া উপাদান দারুন কাজে দেয়। তাই গরমে যদি এমন রোগের শিকার হন কেউ, তাহলে নিশ্চিন্তে কাজে লাগাতে পারেন।
এক্ষেত্রে যে যে ঘরোয়া পদ্ধতিগুলি দারুন উপকারে লাগে, সেগুলি হল...
১। রসুনঃ রসুনে রয়েছে অ্যাজুইনা নামে এক ধরনের প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদান, যা যে কোনো ধরনের ফাঙ্গাল ইনফেকশন কমাতে দারুন কাজে লাগে। তাই তো রিং ওয়ার্মের ক্ষেত্রেও এই সবজিটি দারুন উপকারে লাগে। অল্প করে রসুনের কোয়া নিয়ে সেগুলিকে ছোট ছোট করে কেটে নিন। তারপর সেগুলিকে দাদের উপর রাখুন এবং ব্যান্ডেজ দিয়ে বেঁধে দিন। এভাবে সারারাত রেখে দিলেই মুক্তি মিলবে দাদ ও চুলকানির হাত থেকে।
২। অ্যাপেল সিডার ভিনিগারঃ একটা ছোট পাত্রে অল্প করে অ্যাপেল সিডার ভিনিগার নিন প্রথমে। তারপর তাতে তুলো ভিজিয়ে ক্ষত স্থান পরিষ্কার করুন। এমনটা দিনে কয়েক বার করলেই দেখবেন সমস্যা কমতে শুরু করে দিয়েছে। কারণ, আপেল সিডার ভিনিগারটিতে অ্যান্টি-ফাঙ্গাল প্রপাটিজ রয়েছে, যা এমন ধরনের সংক্রমণ কমাতে দারুন কাজে আসে।
৩। হলুদঃ এতে রয়েছে বিপুল মাত্রায় অ্যান্টি-বায়োটিক প্রপাটিজ, যা এই ধরনের সংক্রমণের প্রকোপ কমাতে দারুন কাজে আসে। এক্ষেত্রে প্রথমে অল্প করে হলুদ জল বানিয়ে নিন। তারপর তাতে তুলে ভিজিয়ে যে যে জায়গায় দাদ হয়েছে, সেখানে আলতে করে লাগাতে থাকুন। দিনে কমে করে তিন বার এমনটা করলে দাদ ও চুলকানির প্রকোপ দূর হবে।
৪। অ্যালো ভেরাঃ ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে শুধু নয়, ফাঙ্গাল ইনফেকশনের মতো রোগের প্রকোপ কমাতেও এই প্রকৃতিক উপাদানটি দারুন কাজে আসে। এক্ষেত্রে রাতে শুতে যাওয়ার আগে অ্যালো ভেরা পাতা থেকে পরিমাণ মতো জেল সংগ্রহ করে দাদের উপর সরাসরি লাগাতে হবে। সারা রাত রেখে পর দিন সকালে ধুয়ে ফলতে হবে। প্রতিদিন এই ঘরোয়া চিকিৎসাটি করলে অল্প দিনেই দাদ এর মত রোগ দূর হবে।
৫। টি ট্রি অয়েলঃ এতে রয়েছে অ্যান্টি-ফাঙ্গাল এবং অ্যান্টিসেপটিক উপাদান, যা শুধু রিং ওয়ার্ম নয়, আরও বেশ কিছু ত্বকের রোগ সারতে দারুন উপকারে লাগে। ছোট একটা বাটিতে এই তেল নিয়ে তাতে তুলো ভিজিয়ে ক্ষতস্থানে লাগন। এভাবে দিনে তিনবার করতে পারলেই দুর হবে দাদ ও চুলকানির মত রোগ।
0 comments: