বঙ্গবন্ধু হাট-টেক পার্কের অবকাঠামো নির্মাণ কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাংসদ ফজলে হোসেন বাদশা, সাবেক মেয় এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, সাংসদ আকতার জাহান ও সাংসদ আয়েন উদ্দিনসহ অন্যরা-সোনার দেশ
রাজশাহীতে শুরু হলো কাক্সিক্ষত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই-টেক পার্কের অবকাঠানো নির্মাণ কাজ। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে নগরীর জিয়ানগর এলাকায় তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর এই পার্কের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সীমানা প্রাচীর ও গেইট নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেছেন তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
এর আগে এ বছরের ১৩ জানুয়ারি হাই-টেক পার্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রতিমন্ত্রী পলক। এরপর সেখানে ভূমি উন্নয়ন কাজ হয়। এবার ভিত্তিপ্রস্তর পড়লো সীমানা প্রাচীর ও গেইট নির্মাণের। এর মধ্যে দিয়েই দৃশ্যমান হতে শুরু করলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই-টেক পার্ক।
নির্মাণ কাজের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, হাই-টেক পার্কের নির্মাণ শেষে এখানে ১৪ হাজার তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। ২০২১ সাল নাগাদ রাজশাহীকে সারাবিশ্বই চিনবে এই হাই- টেক পার্কের মধ্য দিয়ে। তিনি বলেন, রাজশাহীর মানুষ শুধু শ্রমনির্ভর থাকবে না। ভারতের ব্যাঙ্গলোর, আমেরিকার সানফ্রান্সিসকো ও ক্যালিফোর্নিয়ার সিলিকন সিটির মতো বঙ্গবন্ধু হাই-টেক পার্কে বিশ্বমানের সফটওয়্যার তৈরি হবে। শুধু মেধার বিকাশ ঘটিয়ে রাজশাহীর আর্থসামাজিক উন্নয়ন করা হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, প্রকল্পের পরিচালক একেএম ফজলুল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সাংসদ ফজলে হোসেন বাদশা, রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সাংসদ আয়েন উদ্দিন ও সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ আক্তার জাহান। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন, নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার ও জেলার সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি শাহীন আক্তার রেণী, রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ হবিবুর রহমান, রাজশাহী বেতারের ভারপ্রাপ্ত আঞ্চলিক পরিচালক হাসান আখতার প্রমুখ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেথ হাসিনার ইচ্ছাতেই রাজশাহীতে হাই- টেক পার্ক নির্মিত হচ্ছে। শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভাপতি, তিনি বঙ্গবন্ধু কন্যা। তিনি জাতিকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, জাতীয় নেতা হিসেবে। ১৪ দল তাঁকে নেতা মেনেই ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। তাঁর নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে চলেছেÑ অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি তাঁর নেতৃত্বেই।
তিনি বলেন, হাই- টেক পার্ক রাজশাহীর অর্থনীতির চেহারা পাল্টে দিবে। পৃথিবীর মানুষ হাই-টেক পার্ককে কেন্দ্র করেই রাজশাহীকে চিনবে। রাজশাহী আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে পরিগণিত হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এইএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন,আজকের দিনটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে অগ্রগতির দিন হিসেবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই-টেক পার্কের প্রশিক্ষিত তরুণরাই আউটসোসিঙের মাধ্যমে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সক্ষম হবে একদিন।
তিনি বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনের গতিশীল নেতৃত্বে দেশ সমৃদ্ধির এক নতুন সোপানে উন্নীত হয়েছে। এই অগ্রগতির ধারায় দেশের মানুষ ব্যক্তিগতভাবেও উপকৃত হচ্ছে। দেশের মাথাপিছু আয়ের চিত্র দেখলেই সমৃদ্ধির পরিব্যাপ্তি সহজেই উপলব্ধি করা যায়।
জনাব লিটন বলেন, এই অগ্রগতির ধারাকে আরো এগিয়ে নিতে, বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করতে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে নৌকা মার্কা প্রতিকে বিপুলভাবে ভোট দিয়ে আবারো নির্বাচিত করতে হবে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালির আদলেই এর অবকাঠামোগত নির্মাণ হবে। হাই -টেক পার্কের ভেতর ১০ তলা একটি ভবন নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়া ৬২ হাজার বর্গফুট আয়তনের পাঁচতলা বিশিষ্ট একটি আইটি ইনকুবেটর কাম ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন করা হবে। সব কাজ শেষ হবে আগামি তিন বছরের মধ্যে। পদ্মাপাড়ের ৩১ দশমিক ৬৩ একর জমির ওপর গড়ে উঠতে যাওয়া এই পার্কটি নির্মাণে ব্যয় হবে ২৮১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ২৪ নভেম্বর রাজশাহীতে এক জনসভায় রাজশাহীতে এই সিলিকন সিটি নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন সিটি মেয়র থাকা অবস্থায় এটি নির্মাণের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠান। এরপর গতবছরের ২৩ ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়।
0 comments: